স্বপ্না বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা

পুজোর ভেতরে যে বাহির খোলা ঘর
১।
ফুলদানি রাখা ছিলো গরাদের কাছে
উল্টালে ভিজেফুল জলের গোসল
ফুলও তো মেয়ে আর লজ্জা তার
রাঙা রঙ কিঞ্চিত বারোয়ারি
আলো একইভাবে আসে যেমন রোজের
এসে চন্দন বাটে কোষে কোষে ভরে দেয় সর
শিউলির চলন আরও আগে শুরু হয়ে গেছে
২।
দোয়াতদানির পাশে তোমাকে বেশ মানিয়েছে
কলমটি আড়ে রাখা এবং তুমি
বাঁদিকের কোণঠাসা শঙ্খমুদ্রায় বসে আছো
সাদা শাড়ি আলতাপাড় সাবেকি প্রতিমা
পুজো হচ্ছে দূরে তুমি কাছ থেকে দূর্বা তুলে নিলে
৩।
ঘ্যাঁচ থামলো ট্রাম নেমে এসো শ্বাস নাও
এ বাতাসে ধাতুগন্ধ মেশা
তোমার ব্লুইজ- ছাই পাঞ্জাবি জিন্সের টাইট পকেট
প্যান্ডেল হাত নাড়ছে আমাদের দিকে
হাসি ফেনা হতে হতে ছিটকে পড়ছে আমার কুর্তিতে
এবার আঙুল ধরো পা ফেলি এক পথ রেখে
কথাদের রেখে আসি
১।
সেই কবে কথাদের পড়েছিলাম
তারপর চুইয়ে এলো জল
জল কিংবা জলের জানলা
এখন কাছে আসে ঝর্ণা
ছোঁয় চুমু রাখে পিছলে পা হড়কায়
মাংসের কাছে কিছুটা গোপন রেখে ঘর ফেরে
২।
আবেগের আকাশ নেমে এলো
তুমি তো সাক্ষী আছো প্রেম ও পণ্যের
বালিশের ঠোঁট সেও ফুলেছে নুনে
দামা জমে আছে নরম পাঁচিল
এবার ঘর ভিজছে আশরীর আহুতি ভিজতে চাইছে
আগুন উসকালে নিবিড়ের ধান বুলবুলি খেয়ে যায়
গোপন অথবা গোপন
১।
চুপ করে থাকা এক দিঘি
গালে হাত আঙুলে কুলুপ
নখের বন্দিশে মাটিরঙ লাল
বুক থাবা পেতে বসে আছে সিংহমুখী
নড়লে চিড়িক ওঠে বারুদের গুঁড়ো
চাপা দাও গোপনবিহারী শঙ্খের খোল ও শামুক
২।
জিভের টক্কর জেনো
চুরি হয় কথাদের ঢঙ
অপরের ঠোঁট বললে
পরটুকু দাঁড় টেনে রাখে
কী বললো? কী বললো!
উচ্চারণ ফিসফিস হয়
নৌকো সড়াৎ হলো
বর্ষার থরথর জলে
৩।
চেয়ে আছো অগুন্তি অন্ধকার
জোনাকি উড়ছে ইতিউতি
ওই চাওয়া চুমুর গাণিতিক
স্পর্শের আগেই ছুটে যায়
পারদ-দোদুল উষ্ম তরল
এলোচুল বেঁকাত্যাড়া নাকফুল রূপো
প্রান্তিক স্টেশন যেন দু’হাত ছড়িয়ে আছে
রসভরি অন্ধকার আরও আরও ঘন করবে বলে