অনুবাদ কবিতা
দেবলীনা চক্রবর্তী

মূল কবির পরিচিতি : জাভেদ আখতার একজন বিশিষ্ট কবি, বিখ্যাত চিত্রনাট্যকার, সংলাপ রচয়িতা এবং গীতিকার। জাভেদ আখতারের জন্ম ১৯৪৫ সালে গোয়ালিয়রে। তার শৈশব কেটেছে উর্দু সাহিত্য ও সংস্কৃতির পীঠস্থান লখনউ শহরে। সাহিত্যশিল্পের সঙ্গে তার পরিবারের সংযোগ অনেক পুরনো। উর্দু কবিতা ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে তিনি এক নতুন ধারা নিয়ে আসেন। তার কবিতায় প্রেম এবং সামাজিক অবিচার উভয়েরই প্রকাশ সুস্পষ্ট। আরো আছে মানবজীবন এবং বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সম্পর্কে গভীর-জটিল প্রশ্ন। তার দুটি উর্দু কবিতার বাংলা তর্জমা করা হলো।
১
( মূল কবিতা – দুস্বরী , কবি – জাভেদ আখতার )
মুস্কিল
তোমাকে ভুলে যাওয়া’ই
এখন শ্রেয় মনে হয়
কিন্তু ভুলে যেতে চাইলেও কি করে ভুলবো
কারণ তুমি তো বর্তমান, কোন স্বপ্ন তো নও –
এই মনের দুর্দশার কথা আর কি বলবো !
ভুলতে পারি নি
সে সব ঘটনা
যা ঘটে নি কোনদিন
সে ছিল এক খেয়াল
যে এক শব্দ যা পৌঁছলো’ই না
এমন সে কথা
যা তোমায় কোনদিনো বলতে পারলাম না
আর সেই এক সম্বন্ধ
যা আমাদের মধ্যে ছিলো’ই না কখনো
আমার মনে আছে সে’সব
যা ছিলো’ই না কোনদিন।
( মূল কবিতা – বর্গাদ , কবি – জাভেদ আক্তার )
বট বৃক্ষ
আমার চলার পথে ছিলো এক বাঁক
আর সেই বাঁকে
দাঁড়িয়ে ছিলো এক বটবৃক্ষ
সুউচ্চ ঘন
যার শীতল ছায়ায় আমি বেশ কিছু সময় কাটিয়েছি
আমি সবসময় ভাবতাম যে
পথের এই বাঁকটি আসলে
এখানে গাছটি আছে বলেই
কিন্তু বয়সের ভারে সে গাছ একদিন পড়ে গেলেও
পথের বাঁক এখনো সেভাবে’ই রয়ে গেছে।
যতদূর দ্যেখা যায় দেখি
এ অনন্ত চলার পথে
আছে অসংখ্য বাঁক
কিন্ত তা বৃক্ষহীন
এই পথেই আমি পেয়ে যাই পথের বিশলতা-মহত্ত্ব
তবুও প্রত্যেক বাঁকে এসে
মন প্রশ্ন করে
সেই যে বাঁকে ছিল সুবিশাল এক ছায়া
কোথায় হারিয়ে গেলো!