মেঘমল্লার
তনিমা হাজরা

১
এই আষাঢ়ে একটি বীজসঞ্চার করেছি
মহীরুহ প্রত্যাশায়,
যদিচ প্রত্যাশা শব্দটি বড় স্বার্থপর,
তবু এক ছায়াস্বপ্ন দেখি।
শুনি অনাগত পক্ষীর কাকলি।
গাছ টেনে আনে মেঘ,
ঝুরো মাটিদের আত্মীয়তায় বাঁধে,
ডালায় সাজায় নির্মল নিঃশ্বাস।
এই আষাঢ়ে একটি বীজসঞ্চার করেছি এমনি
যা একদিন অরণ্য উপহার দেবে।
লোকালয়ে বড় ভয় পাই আজকাল।
অরণ্য ভীষণ সত্যবাদী,
ওখানে হুংকার হুংকারের মতো সৎ,
কাকলি কাকলির মতো সাবলীল।
অরণ্যে পোষাক বা মুখোশের কোনো দোকানপাট নেই।
২
অস্থি’র ভেতরে ভালবাসা আত্মস্থ হয়ে থাকে,
অলিন্দ নিলয়ে বয়ে যায় বানভাসি জল।
শরীর ছিঁড়েছে এই গমন দুরন্ত
কৃষ্ণচূড়া কেশে অবেলা বসন্ত রোদেজলে সেরে নেয় চান।
মৌমাছি গুন গুন পুড়েছে ঝরেছে আজ একলা জারুল,
আনমনা প্রজাপতি ডানা মেলে বসে মাজেন্টা পাপড়ির গায়।
এইসব সকালবেলায়, মেয়েটি মেঘ হয়ে যায়,
গুরু গুরু নূপুর বাজে তার পায়,
বৃষ্টি হবে, বৃষ্টি হবে।
বৃষ্টির ছাঁট হাওয়ায় হাওয়ায় উড়ে এসে চুপিচুপি ছেলেটির ঠোঁটের ওপর ভালবাসা বিছিয়ে রেখে যায়।