মঙ্গলাখ্যান
দেবলীনা চক্রবর্তী
১
এক অপার্থিব আলোয় ছেয়ে আছে সকাল
কোটি প্রহরের ঘুম ভেঙে
সূর্যতেজ ও অরণ্য ঘ্রাণের মায়া মেখে
ক্ষীণ আলো ধরে রেখেছে তমাল পাতারা।
অপার সম্ভাবনায় দুই হাতে নিশানা বেঁধে
লক্ষ্যে স্থির , যেন কত সহজ এই ব্যাধ জন্ম!
অছিলায় প্রহর কাটে
কোথায় সে হরিণ? কোথায় বড়াল?
গোপন অভিসন্ধির গন্ধে আড়াল হয়েছে যেন তাম্রচূড় পাখিটিও!
তূণীর ভরা বিষমাখা তীর,তবু লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় দু’চোখ
শূন্য বাগুরা হাতে দিনমানের ব্যর্থতা ভুলে
সূর্য ডোবা গোধূলির প্রসন্ন আলো ধনুক-ছিলায়
বেঁধে ফিরে আসে ব্যাধ
ফুল্লোরার একাকী আঙিনায়….
২
সনকার সুখের সংসারে বিষহরীর কোপ
চাঁদের গায়ে আদ্যন্ত অমানিশার অন্ধকার!
পাতার ভেলা ভেসে যায় –
বন-বাদার, গ্রাম থেকে গ্রাম!
নীল বিষময় শরীরী অক্ষরে
সতী লক্ষ্মী বেহুলার পণ –
শেষে জেগে ওঠে জন্ম!
আদায়ী কথার যত্নে পৃথিবীর বুকে বেড়ে ওঠে
ফণীমনসার মাহাত্ম্য!
৩
বালি বালি মেঘ জমে আকাশের অধরে
সাদা জ্যোৎস্না ঘাটে টলমল লাজুক জল
আর মাঝ গাঙে মজেছে ভাটিয়ালী সুর।
পাটনীর খেয়ায় তখন অরূপরতন
শ্রী লক্ষ্মীর আলতা রাঙা মঙ্গলাচরণ।
দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তর , অতঃপর —
অন্নপূর্ণার আশীর্বাদে দুধে-ভাতের নিশ্চিত
উপশম।
পাপড়ি গঙ্গোপাধ্যায়
January 3, 2022 |ভালো লাগল