নূরজাহান
কৌশিক সেন

ধীরে ধীরে উঠে বসেছি সূর্যোদয়ের পর। শরীর থেকে একটু একটু করে খুলে রাখছি আঁশটে গন্ধ, জিহ্বাদাগ, মোচ্ছবের ইতিবৃত্ত। অশ্বারোহী সৈন্যদলকে বলেছি, ফিরে যেতে। বুভুক্ষু পদাতিক বাহিনীকে পাঠিয়েছি মেঘের জলসত্র। যুদ্ধবিরতি এখন। সন্ধিপ্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছি গর্জনতেলের প্রদীপে। মশাল জ্বালিয়ে রেখেছি রতিশুদ্ধ তাবুতে।
পাগলী, তোর স্বচ্ছ রাতপোশাকে জীবাশ্ম দেখেছিলাম বলে আমার আর কোনোদিন ইতিহাস পড়া হয়নি, জানতেই পারলাম না, পবিত্র রমজান মাসে কীভাবে গরু পাচার হয়ে যায় ধূসর মহেঞ্জোদারোয়। ছেনালি ছেড়ে কবে তখত সমলালি নূরজাহান! জেনেছিস্, মৃত প্লাটিপাসকে কীভাবে ম্যারিনেড করতে হয় বিমূর্ত রাত্রির অন্ধকারে!
রাতের অন্ধকারেই ফিরিয়ে দিয়েছি স্বাক্ষরিত গোপন শর্তগুলি। দুটি সূর্যাস্তরোহিত সাম্রাজ্য একত্রিত হয়ে যায়, শুধুই রতিশয্যার আতিশয্যে! রক্তপ্রবাহ স্তিমিত হয়ে আসে অমোঘ শিশ্নচূড়ায়! লাম্পট্য নয়, ক্রেঙ্কারে জেগে ওঠে বারাঙ্গনার শোক। ওসব ললাটলিখন টিখন সব মিথ্যে! ওসব স্বদেশপ্রেম টেম, সব ভাঁওতা!
তুই এবার উঠে বস পাগলী! ধীরে ধীরে মুছে ফেল শরীর জোড়া নীলকন্ঠ মেঘ, জলপ্রপাতের দাগ মুছে রাখ সুগভীর গিরিখাত থেকে। নাভিপদ্ম থেকে মুছে রাখ সাম্রাজ্যবাদের ক্ষতচিহ্ন, ঊরুসন্ধিতে ফুটিয়ে তোল যুগসন্ধির আমকলকা। শতাব্দীর শেষে ইতিহাস তোকেই নূরজাহান বলে চিনুক!!