দুটি কবিতা
শুভদীপ মাইতি

দীর্ঘ বিরতির আগে                     

একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে যাচ্ছি।
ফেলে যাচ্ছি প্রতিলিপি― অক্ষর আখড়া।
তেচোখা বিদ্রুপ, ফালাফালা শ্লেষের জারন―
                                            ফেলে যাচ্ছি।

এই সান্ধ্যকালীন মূর্ছনায়
আপনি পারফিউম দিচ্ছেন, ধূপ জ্বালাচ্ছেন,
সার্ফিং করছেন দূরন্ত ইন্টারনেট।

এই পৃথিবীর সমগ্ৰ আঁধার গিলে নিচ্ছে আমাকে।
আমি তন্ন তন্ন খুঁজছি,
আধপেট নুন-ভাত, একটা নিশ্চিত আশ্রয়।

আমি কবিতায় তুখোড় ভেঙে ফেলছি রতি সঙ্গম,
ভেঙে ফেলছি বিষন্ন সময়, রাষ্ট্রীয় নিয়ম।
চিবিয়ে খাচ্ছি শব্দ-ব্রহ্মের মাথা,
পেড়ে আনছি আগুন।

এই ঐন্দ্রজালিক রাতে, আমাকে ছিঁড়ে খাচ্ছে ক্ষিদে।
আমি পকেট হাতড়ে খুঁজছি নেশা।
দেখছি আকাশে তারা খসছে,
মুহুর্মুহ ছুটে এসে গেঁথে যাচ্ছে বুকে।

প্রবাসী হওয়ার আগের মুহূর্তে
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে যাচ্ছি।
ফেলে যাচ্ছি অক্ষর আখড়া, তেচোখা বিদ্রুপ, ফালাফালা শ্লেষের জারন।
প্রবাসী হওয়ার আগের মুহূর্তে হে মাননীয়া পাঠিকা
আপনি জানতেই পারলেন না
কতোটা ভালোবাসা রেখে, চলে গেলেন কবি।


ফিরে আসা

কবিরা কথা রাখে না।
আসলে রাখতেও নেই কথা।
ভরা শ্রাবণে যখন শালুক পাতায় জল টলমল,
ছই নৌকায়, অস্তরাগে ফিরে আসলেন কবি।

দীর্ঘ বিরতি নেওয়ার মুহূর্তে-
ফিরে আসলেন অভুক্তের ক্ষিদের মতন।
সতেজ চিকনি শাক, চৌরাশিয়ার বাঁশির মতন।
একাদশীর চাঁদ, পুরোনো বাতের ব্যাথার মতন।

এই শব্দের চাষ, অক্ষরপ্রতিমা, প্রতিলিপি
গভীরে যে নোনাজল, ক্ষত
চারিয়ে যাচ্ছে। আরও গভীরে
অতল ডুবে যাচ্ছেন কবি।

অসুস্থ বাবার মুখে নুন ভাত তুলে দিতে দিতে
কবি ভাবছেন, শক্তি চাটুয্যে লিখেেছিলেন―
“যেতে পারি,কিন্তু কেন যাব।”

1 Comment

  • Bidisha Chakraborty

    Reply January 24, 2023 |

    বেদনার মূর্ছনা ফুটে উঠেছে

Write a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

loading...