দুটি কবিতা
পিয়াংকী

এ দেহে যতসংখ্যক তিল


ঘুম —-

গভীর এই শব্দের ভেতর পূর্বজন্ম গচ্ছিত রেখেছেন যিনি তিনিই এ জন্মের সর্বোচ্চ অসুখ। মধ্যরাত এলেই প্রতিটি নিঝুম দ্বীপ কাঁধে ঝুলিয়ে দিয়ে নৌকার পাটাতনে বসে থাকেন, আমি হাঁটি। একা, একদম একা। অতঃপর তিনি  আসেন, ছুঁতে চেষ্টা করেন একাকিনী দুপুরের ঘুঘুর ডাক, আগাছা সরিয়ে উলঙ্গ করে দিতে চান এ দেহের সর্বমোট তিলসংখ্যা। আমি গোটাকয়েক জ্যান্ত মাছ গায়ে মেখে নিয়ে বলি, “নদীসংখ্যা ১ সূর্যসংখ্যা ১ পুরুষসংখ্যা ১”

  জানালা খুলে রাখার মতো আশ্চর্য কোনো রাত নেই বলেই ক্রমাগত ভেঙে যায় সিঁড়ি। ধ্বসের ভিতর কোকিলের বসন্ত  , ফালাফালা করে দেয়  আশ্বিন অথবা অঘ্রাণ। সংক্রান্তির গা ঘেঁষে নতুন আউশধান, প্রাচীন অমাবস্যা আর  নিয়ম করে ছাতিম গাছের   নিরাময়। সূর্য ঢলে গেলে আয়নার দিকে তাকাই। ফ্যালফ্যালে সাদা চোখে মধ্যযাম। বোষ্টম এসে দাঁড়ায়। ওর বুকে প্রাক্তন-শব্দ,  ফেরৎ খুচরো আর নিরুদ্দেশ হলুদ ট্যাক্সি। 

বাঁশি বাজে,  কৃষ্ণ তৃতীয়ার নির্মেঘ সূর্য জানে বাঁশি আসলে একটি যুগের কাছে রেখে আসা যাবতীয়  জলীয় বাষ্প, সিঁথির সরলরেখা বরাবর  চলমান  সড়ক … 

জখম  


নিভৃতে রেখেছি। 
কুলুঙ্গিতে বাঁধা সোহাগ গার্হস্থ
অনুভূমিক তল ভাসিয়ে দিয়ে গেছে ওরা

এখন… 
বসবাসের জলে ফড়ফড় শব্দ, গুবড়ে পোকার সামান্য ওজন 

জুঁইমালার পাশে, অকৃত্রিম স্পর্শে শস্যক্ষেতের দশঘটি জলপেট

নিরাপত্তার দাগ উঠে গেছে
ক্ষারের ক্ষত ডিপক্লিন করেছে এ নৃতত্ত্ব

পার্বত্য-বর্ষার সাথেই অসংখ্য ঘনসাপ।
 এর  সমান্তরালে ধ্যানভাঙা কপাল , জুড়ে থাকা বিভৎস  লাল

চুল্লি ঠান্ডা, নিথর — 
মৃতপ্রায় রেলপথের কাছাকাছি একটা গোল আয়না, কেউ যেন রেখে গেছে 
চারদিকে শুধু তুলসীগাছ , জীবাণুনাশক 

আমি আন্দাজ করছি –জখমের চেয়ে ডিপ্লোম্যাটিক,  শূন্যস্থানও নয়

1 Comment

  • Kaushik Sen

    Reply January 25, 2023 |

    এ দেহে যতসংখ্যক তিল – খুব ভালো লাগলো

Write a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

loading...