অন্নপালি
উত্তম বিশ্বাস

অনেক কাজের বরাত পেয়েছে সর্বকল্প। প্রথমে টিলা ভেঙে ভূমি হবে। পরে ঝোপ জ্বালিয়ে ক্ষেত। আর পৃথিবীর সমস্ত স্বপ্ন-সন্ধানী মানুষের ইচ্ছাকে মান্যতা দিয়ে কাঁটাগুল্ম হটিয়ে বুনতে হবে রাই-সরিষা।
প্রতিটা খালের ওপরে বসবে সাঁকো। আল বাড়িয়ে ব্যাপক হবে পথ! সব সব করতে হবে সর্বকল্পর।
একা একা এতকিছু পারবে তো সে? কেন পারবে না? মাথায় গামছার ফেট্টি বেঁধে জ্বলন্ত সূর্যকে হাঁসের মতো আরেকবার দেখে নিলো সর্বকল্প।সে অনেকদূর অব্দি দেখতে পায়। কেননা সর্বকল্প আর পাঁচজনের মতো সাধারণ নয়। সবাই বলে সে নাকি সাধক।
এখন অস্ত্রের ওপর অস্ত্র রেখে ঘষা দিচ্ছে সর্বকল্প। সাপের ফনার মতো হাঁসুয়া। ছিনে জোঁক আর সাপেরা সরে সরে যাচ্ছে। একটা দুটো পাখির বাসা। ডিমটা কি ভেঙে গেল? বাসাটা তুলে ভালো করে দেখে নেয় সর্বকল্প। না ডিম নেই, শুধু খোলক। ছোট ছোট ঝোপ। যারা ছায়া দিতে পারেনা, তারা সবাই সর্বকল্পর হাঁসুয়ার কোপ খেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে। ঠা ঠা রোদ! সর্বর চাঁদি পুড়ে যাচ্ছে।
এমনসম সরু আল বেয়ে এল একটি মেয়ে। কোলে ছোট্ট একটি খরগোশের ছানা। কপালে কুঁচ ফলের টিকলি। কণ্ঠিতে ধাগা। হাতে একটা কাঁসার ঘটি, তাতে জল। মেয়েটিকে দেখতে ঠিক যেন মাখনের মণ্ডর মতো। মেয়েটিকে দেখে সর্বকল্পর তৃষ্ণা যেন আরও খানিক বেড়ে গেল। সে পান্থের মতো অঞ্জলি পাতল। মেয়েটি তার ঘটি থেকে সবটুকু জল ঢেলে দিল। গামছায় মুখ মুছে সর্বকল্প জিজ্ঞেস করল, “কে পাঠাল জল?”
-“মা!”
মেয়েটি ঘাসের ফুল নিয়ে অনেকটা খেলা করল। নরম দূর্বা ছিঁড়ে খরগোশ ছানাকে খাওয়ালো। তারপর খেলতে খেলতে কোথায় যেন অদৃশ্য হয়ে গেল।
হঠাৎ সর্বর মনে হল, “এই রে! মেয়েটা কোন বাড়ির? ওর নাম ধাম কিছুই তো জিজ্ঞেস করলাম না?”
অল্প সময়ে অনেক কাজ সেরে ফেলতে হবে সর্বকল্পের। কেননা সে জেনেছে, জীবনের সারৎসার বলতে অতি অল্পই। আগামীকাল থেকেই হয়ত যুদ্ধ শুরু হবে। এবার পাকিস্থানের বদলে হয়ত অন্য দেশে দেখা দেবে চরম খাদ্য সংকট। চিনের দিক থেকে হয়ত আর মহামারী আসবে না। আসবে আমাদেরই কোনো প্রতিবেশীর ঘর থেকে। সাময়িক শান্ত হয়েছে বটে শ্রীলঙ্কা! আবার কবে তুমুল তরঙ্গ উঠবে কেউ জানেনা! গঙ্গার তলা দিয়ে মেট্রো চলছে হুসহুসিয়ে! এবার হয়ত দাবী উঠবে, “পুরুলিয়ার পাহাড় কেটে আরেকটা ইলোরা বানালে হয়না?”
এসব কাজও কি করতে পারবে সর্বকল্প? হয়ত তাকে পারতেই হবে। কালের ফেরে মানুষকে কতকিছুই না করতে হয়! আপাতত সে ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে ফসল ফলাবে বলে মনস্থির করেছে। কেননা সর্বকল্প জেনেছে কল্পনার কাছ থেকে কন্দ পেতে হলে সবার আগে যে কাজটা জরুরী,–গোঁড়ায় কিছু দিয়ে নিতে হবে।আর সেকারণেই জঙ্গল জ্বালানোর মধ্যে দিয়েই জীবনের যাত্রা শুরু করেছে সে।
পেটের নাড়ি সেদ্ধ হয়ে আসে সর্বকল্পর। সে ঘন ঘন পথের দিকে তাকাতে থাকে। ঝিঝির পাখার মতো রোদ। বেশিক্ষণ চেয়ে থাকা যায়না। জলভরা মেঘের মতো টলমল পায়ে কে আসে ওই? সর্বকল্প অস্থির হয়ে ওঠে, “মেয়েমানুষ মনে হচ্ছে? কে? ওর কাঁখে কী? ভাত-জল বুঝি?”
মহিলাটি সত্যি সত্যি ওর আলের ওপরে এসে বসল। গামছার গিঁট খুলে ইশারা করল। সর্ব বুকের ঘাম মুছে খেতে বসল। আর তখন মেয়েটি আস্তে আস্তে কথা শুরু করল, “দুটো হেল্পার নিলেও তো পারতে? একা সম্ভব?”
-“শালারা এসব কাজ করে যে শিখবে!”
-“শিখিয়ে পড়িয়ে নিলেই তো হয়?”
-“সব কি আর শেখানোর জিনিস! এসব বিদ্যে মা’র পেট থেকে পড়ার সময় এট্টু আধটুক পেটে করে আনতে হয়!”
-“হেঁয়ালির কথা শুনলে হাসি পায়!”
মেয়েটি এবার সত্যি সত্যি হাসতে থাকে। ভরন্ত কলসের মতো ওর হাসির বেগ। সর্ব খেতে খেতে তার থাই দুটোতে হাত বুলোতে থাকে।
মেয়েটি জিজ্ঞেস করে, “রান্নায় কি খুব ঝাল হয়েছে?”
সর্ব কথা কয় না। সে বোকার মতো ড্যাবডেবিয়ে চেয়ে থাকে মেয়েটির মুখের দিকে।
মনে মনে কতবার উচ্চারণ করে উঠল, “তোমাকে যদি অন্ন নাম দিই?”
মেয়েটিও সর্বর কল্পনায় সঙ্গ দিয়ে বলবে, “আহা! আমার নাম আছে তো!”
-“যা আছে থাক না। তোমাকে এই নামেই বেশি মানাচ্ছে মনে হল!”
-“তা দাও। শুধুই অন্ন? আর কিছু না?”
-“অন্ন প্রতিপালক?”
-“ইস! নামের কী ছিরি!”
এবার সর্ব একটু লজ্জা পাবে। তবে অল্প। অতএব সে কেটেছেঁটে করবে, “অন্নপালি!” অন্নপালি! আমার অন্নপালি!” মনে মনে একশোবার উচ্চারণ করতে থাকবে সর্ব।
দূরে একটি গাভী ভীষণরকম হামলাচ্ছে। গাভীটার পালান দুধের ভারে একেবারে টনটন করছে। সর্বর এমন পালানে খুব হাত বুলোতে ইচ্ছে করে। তখন উঠতি বয়েস।পাড়ায় যদি কোনোকারণে ঘোষ না আসত, তখন প্রতিবেশী বিনোদ পিসি সর্বকে খুব সাধাসাধি করত। সর্ব বিনোদ পিসির অনুরোধে অনেকের দুধ দুয়ে দিতো। আর তখন এমন গাভী পেলে, পালানে আস্তে করে হাত বুলিয়ে গাভীকে শান্ত করে নিত। সেসব দিনের কথা মনে পড়লে আজও সারা শরীর শিরশির করে ওঠে ওর! গাভীটা কেমন যেন ছটফট করছে। দেখে মেয়েটির মন চঞ্চল হয়ে উঠল। ভাবল, “আহা রে! হয়ত বাছুরটা আটকা পড়েছে কোথাও।”
বাছুর খুঁজবে বলে মেয়েটি উঠে গেল। সর্বকল্প অপেক্ষা করতে লাগল। অন্ন ফিরে এলে ওই ছাতিম গাছটার ছায়ায় খানিকটা শোবো। তখন সে নিশ্চয়ই জিজ্ঞেস করবে, “কী শুয়ে পড়লে যে?”
-“আর বলছ! কোমরে খুব খিঁচমারা ব্যথা”
-“হবেই তো! এই বয়েসে এত ধকল সয়?”
-“না কী এমন কাজ করেছি!”
-“কাজ নয় মানে? তুমি যেগুলো করছ এর মূল্য নেই বুঝি? গিঁটটা এট্টু এলিয়ে দাও, আরাম আসবে!” আর তখনই সর্ব পুরুষ হয়েও একটুখানি কাঁদবে!
অন্ন আসছে না দেখে সর্ব উসখুস করে উঠল। একদাদা রাঙা আলু উঠোনো ছিল। ওর গা থেকে মাটি শেকড়বাকড় ছাড়িয়ে ঘষে ঘষে পরিষ্কার করে রাখল। সে এলে দেবে।না, অন্ন আসছে না। এবার সর্ব ঝপ করে তাল গাছে উঠল। মঞ্জরীতে পোঁচ দিয়ে, জিভ পাতল। খোমার ভেতর থেকে বেরিয়ে এল একটি সাপ! সর্বকল্প ঘ্যারায় ঘা দিয়ে অপেক্ষা করতে লাগল। তার এখনো ইচ্ছা, অন্ন এসে বলবে, “কী খ্যাপামো চেপেছে দেখো দিকিনি!”
সর্ব শিস দিতে দিতে বলে উঠবে, “দেখেছ না সাপ?”
-“তাতে কী হয়েছে? ওকে ওর মতো থাকতে দাও না! এসব ঘাটানোর এখুনি খুব কি দরকার?”
কিন্তু না। মেয়েটি এল না! সর্ব অনেক চেষ্টা করে সাপকে সরালো।
গাভীটা তখনো খুব ডাকছিল। বাছুরটা খুঁজতে খুঁজতে মেয়েটি মরীচিকার মতো কোথায় যে মুছে গেল কে জানে!
ভাতঘুমের মধ্যেই অল্প একটুখানি স্বপ্ন দেখে নিল সর্ব। কেননা সর্বকল্পের মতো মানুষেরা নিজেদের জন্যে স্বপ্ন দেখে না। এত অবসরও ওদের নেই। আর সেকারণেই ওরা যখনই সুযোগ পায়, অন্যের চোখ দিয়ে পৃথিবীকে দেখে নেয়। শিথানের কাছ দিয়ে একটা শেয়াল ছুটে গেল মনে হচ্ছে? সর্ব ধড়ফড়িয়ে ঠেলে উঠল, “এই রে! ভাত খাইয়ে গেল। এঁটো বাসনগুলো নিয়ে গেল না? কাদের বাড়ির বউ কে জানে! জিজ্ঞেসও তো করা হল না!”
অনেকটা ঝুম জ্বালানো হল। এখন দাবদাহ। আগুন একাই হাঁটছে একটা দুটো পাহাড়ে। নিরুৎসাহে কেউ কেউ নিভেও গেল। এখন সর্বকল্প ঘন ঘন ঘাড় উঁচু করে দেখে তার নিজের তালুতে তৈরী আশ্চর্য এক উর্বশী পৃথিবী। ঢালে, সমতলে, উপত্যকায় সবখানে ধামা ভর্তি করে বীজ এনে একটা একটা করে পুঁতে শেষ করল সর্বকল্প। সবাই বলল, “এবার কিন্তু আগুনের দাপট একটু বেশিই ছিল। তবে সত্যিকথা বলতে কী, ছাই একটুও ওড়েনি। চোখও জ্বলেনি। এরপর পাহাড়ের ওপার থেকে পুঞ্জ পুঞ্জ মেঘ ভেসে এল। সমতল থেকে এল শত শত প্রশংসা। কেউ বলল, “সেঁচখালের সজ্জাটা একেবারে যেন উপন্যাসের মতো হয়েছে!”
কেউ বলল, “আরে নাহ! সাঁকোটাকে দেখো। ঠিক যেন ছোটগল্প!”
আরও আরও কত লোক এল। যারা লেখাপড়া জানেনা। অথবা অতি অল্পই শিখেছে, তারা বলল, “আর যাই বলো না কেন। বেড়াগুলোকে এমন সুন্দর বাঁধা হয়েছে! ব্যালাড ছাড়া আমি আর কোনকিছুর সাথেই এদের রিলেট করতে পারছিনা!”
কিন্তু এত এত প্রশংসা পেয়েও সর্বর মন ভরে না। সে ভাবে অন্ন যদি আকেকটি বার আসত। সে এসে যদি আরও একবার বিস্ময়ে চোখ মোটা মোটা করে জিজ্ঞেস করত, “সব তুমি করেছে? পারলে?”
-“পারব না মানে? বলছ কী? সকালে একঘটি জল, আর দুপুরে তোমার হাতের একমুঠো ভাত পেলে, আমি আন্দিজও উঠিয়ে আনতে পারি!”
অন্ন মাথায় হাত রাখল, “তোমার কি বাড়িঘর নেই?”
-“আছে তো! ওই যে যারা বলাবলি করে এটা ঠিক উপন্যাসের মতো, গল্পের মতো, ব্যালাডের মতো, –ওটাই আসলে আমার বাড়ি!”
-“যাও! বিশ্বাস হয়না!”
এবার দূরে টিলার আড়ালে তালপাতার একটা ছাউনি দেখিয়ে বলল, “এই তো, যাকে তুমি খুঁজছ, এটাই আমার প্রাসাদ!”
-“এটা তো পাতার ছাপড়া। ঝড় এলে এখনই উড়িয়ে নিয়ে যাবে!”
এবার সর্ব দূরে দৃষ্টি উড়িয়ে দিয়ে বলল, “এর চাইতে দামী ঘরে আমাদের থাকতে নেই! কেননা শুয়ে শান্তি পাবো না। ঘুমিয়ে শান্তি পাবো না। এমনকি সাত রাজার ধন যে অসুখ, ওটাও আর আসবে না! আর ওটুকু না এলে আমরা বাঁচব কী নিয়ে বলো দিকিনি?”
-“আমি যদি দুঃখ হই?”
এবার অন্নর হাতখানি ধরে কাঙালের মতো কাকুতি করে উঠল, “সত্যি বলছ, কথা দাও। আসবে?”
এবার অন্ন জোরে জোরে শ্বাস ফেলে সর্বকে বুঝিয়ে দেয়, সে প্রতিদিন আসবে! আর ঠিক এই সময় ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামল। সর্বর পাহাড় সমতল সব একাকার হয়ে উঠল!
জগতের সমস্ত মানুষের দুঃখের বোঝা এখন সর্বকল্পের মাথার ওপর! পাহাড় বেয়ে গড়িয়ে আসে একঢাল মেঘ। কত বিচিত্র সব অসুখ বুনোহাঁসের মতো এদিক সেদিক থেকে উড়ে আসে। সবার জন্যে উপশম খুঁজে সর্বকল্প অস্থির হয়ে ওঠে! এখন এত্তো এত্তো ফুল ফোটে। সন্ধ্যা হলেই সাঁকোটার ওপর ভেসে ওঠে আধফালি চাঁদ! পরাগে পরাগ লাগিয়ে সকাল হয়। এলিয়ে পড়া লতাগুলোয় হাত রেখে আপনমনে হেসে ওঠে সর্ব। শসাগুলো হয়েছে যেন সুঠাম শিশ্ন! বকফুলগুলো বড্ড বেয়াড়া। একটু ফুটতে না ফুটতেই পাপড়িগুলো যে যার মতো বেঁকে বসবে! সন্ধ্যা হবার আগে সমস্ত মাচা থেকে একটা একটা করে সেরা ফলগুলো তুলে রাখে সর্বকল্প। ঝুড়ি ছাপিয়ে ওঠে। পুঁটলিও বাঁধে কিছু কিছু।
কিন্তু কাকে দেবে সে? সেদিন যে মেয়েটি জল খাইয়ে গিয়েছিল, তাকে? সেদিন যে মহিলাটি বাছুর খুঁজতে খুঁজতে হারিয়ে গেল, ওকে? ওরা কোথায় থাকে? কোথায় ওদের ঘরবসতি? মেয়েটির বাবা কে? মহিলাটির স্বামী শাশুড়িই বা কারা? কাউকেই চেনেনা সর্বকল্প।
সাঁকো টপকে, সীমানা ভেঙে আজকাল অনেকদূরে চলে যায় সর্বকল্প। ধুলো ওড়া পথ আর বিবর্ণ মানুষজন পেরিয়ে এখন শহরের শৌখিন গলি বেয়ে হাঁকতে থাকে সর্ব। সন্ধ্যা নামে। কেউ দরজা খোলে না। একটা দুটো উঁচু বাড়ির ব্যালকানি থেকে ব্যাগ নেমে আসে। দড়িতে বাঁধা ব্যাগগুলো সর্বর মুখের কাছে এসে দোল খায়! আর সেইসময় সর্ব দরদাম ভুলে মুঠোর মধ্যে শাদা বকফুল নিয়ে মানুষগুলোর মুখের দিকে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে।
কিন্তু নাহ! ওরা কেউই তার অন্নর মতো নয়!
উত্তম বিশ্বাস
June 29, 2023 |কী অপূর্ব প্রচ্ছদ! আমি আপ্লুত!
শিল্পী ও সম্পাদককে শ্রদ্ধা!!!!
অরিন্দম
June 30, 2023 |বেশ ভালো লাগলো । প্রচ্ছদ সত্যিই অনবদ্য । সম্পাদক মহাশয়কে ও অনেক ধনব্যাদ ।
Saurav Roy Chaudhuri
June 30, 2023 |অসামান্য!
খুব ভালো লাগলো গল্পটা!
প্রচ্ছদও হয়েছে দুর্দান্ত।
প্রতীকের কারুকার্যে অলঙ্কৃত হলেও গল্প কিন্তু ভাষার সারল্যে মসৃণ গতিতে এগিয়েছে।
ভেতরের মিষ্টতাটুকুও পরিপূর্ণ ভাবে অটুট রয়েছে।
অনবদ্য লেখা!
ঝর্না বিশ্বাস
July 8, 2023 |দারুন লিখেছেন…