অজিত আমার কাছে আজও একটা বিস্ময়
দেবজ্যোতি রায়

অথচ ওর সঙ্গে আমার পরিচয় ২০১৭ সালে। তার আগে আমি ওর নাম পর্যন্ত জানতাম না। শুনিনি শহর পত্রিকার নামও। ওই বছর আমাকে ও একটা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিল। আমি প্রথম ওর প্রোফাইল ঘাটি। এবং অবাক হই। এই বাংলা ভাষাটা আমি জানতাম না। আমি ওর রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করি এবং ওকে জানাই যে কলকাতা বইমেলায় আমাদের দেখা হচ্ছে। তারপর তো যাকে বলে ইতিহাস। এরপর থেকে শহরের একটা সংখ্যাও বেরয়নি যাতে আমি লিখিনি। আর ওর যোজন ভাইরাস আমাকে থ করে দেয়। বাংলা সাহিত্যে ওই ভাষার কোনো পূর্বসূরি নেই।
শুধু যে অজিতের গদ্য ভাষাই আমাকে বিস্মিত করেছিল তা নয়, যে পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ও একের পর এক উপন্যাস লিখেছে, পাশাপাশি ওর গবেষণা মূলক কাজগুলো, ৪০ বছর ধরে শহরের মত একটা বিধ্বংসী, উঁচুমানের পত্রিকা নিরলস প্রকাশ করে যাওয়া , অথচ সহজ, স্বাভাবিক জীবন যাপনের সুযোগ যা আর দশজন বাঙালি লেখক পেয়ে থাকেন, অজিত কখনো পায়নি। ইচ্ছে করেই পায়নি। ধানবাদ ইতিবৃত্ত যখন প্রকাশ হচ্ছিল ধানবাদের কোল মাফিয়ারা ওর কানের পাশে বন্দুক ঠেকিয়ে ওর স্ত্রী ও শিশুকন্যাটিকে সহ রাতের অন্ধকারে বিছানা থেকে শুধু তুলে নিয়ে গিয়েছিল তাই তো নয়, অজিত সেদিন খুন হয়ে যেতেও পারত, কোনো দৈবী কারণে সেটা ঘটেনি, এছাড়া কীই-বা বলব! অজিত সেদিন খুন হয়ে গেলে আমরা সেই গদ্য ভাষাটাই পেতাম না যেটাকে মলয়দা বলেছিলেন, ‘অজিত রায়ের গদ্য অসাধারণ। জীবিতরা কেউ ওর ধারে-কাছে যায় না। ‘ আর সন্দীপন বলেছিলেন, এটা ভূতের লেখা গদ্য। ঘটনার পরে অজিত প্রথমে দিল্লি ও পরে সেখান থেকে জামশেদপুর পালিয়ে যেতে বাধ্য হবে, অনেক পরে ফিরে আসবে ধানবাদে, ওর পারিবারিক বৃত্তটিও ওকে কোনদিনও শান্তি দেয়নি।
রাত দুটো নাগাদ, আমার দুই চোখের পাতা যখন প্রায় লেগে এসেছে, মাথার পাশে রাখা আমার মোবাইলটা বেজে উঠলে, ‘ওরা আমাকে বাঁচতে দেবে না দেবুদা’,অপর প্রান্তে অজিত। কাঁদছিল। জীবনে বহুবার ওকে বেল্টের আঘাত খেতে হয়েছে, তলপেটে লাথি। ধানবাদ অজিতের পছন্দসই জায়গা ছিল না খুব একটা। দিনের পর দিন ও না খেয়ে থেকেছে। এক রাতে আমি ফোন করে জেনেছিলাম সেদিন সন্ধ্যায় একটা ওমলেট ছাড়া আর কোনো খাবার… তারপরেও অজিত লিখেছে, লেখার কাজে বিরতি কী, অজিত জানত না। ওর পাকস্থলিটা ও ভরিয়েছে ধানবাদের সস্তা দেশি মদে। ওর বৌ যাকে ও একসময় ভালোবেসেছিল,যার গর্ভে জন্মেছিল ওদের ভালোবাসার ফসল, তারাও ওর এই ‘হোলটাইমার না-প্রাতিষ্ঠানিক’ লেখালেখি পছন্দ করত না বলে শুনেছি। অজিত অনেকবারই এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে আমার সামনে। আমি নিজেও একবার দীর্ঘক্ষণ ফোনে ওর বৌ প্রেরণার সঙ্গে কথা বলেছিলাম। অজিতই ফোনটা ধরিয়ে দিয়েছিল। সেই রাতে ও ছিল আমার বাড়িতেই। ওরা সংসারী অজিতকে যতটা দেখতে চায় সাহিত্যের হোলটাইমার লেখক অজিতকে ততটা নয়। আমি বোঝাতে পারিনি অজিতকে সংসারে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলা মানে বাংলা সাহিত্যের কত বড় ক্ষতি! এই গদ্য ভাষাটা একমাত্র অজিতই লিখতে পারে।
অজিতের লেখা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আমি কেন ওর পারিবারিক বৃত্তে ঢুকে পড়লাম? এসব তো পাঠককে না জানালেও চলত! কিন্তু আমি মনে করি চলত না। কারণ লেখা তো জীবন থেকেই আসে। একজন লেখককে তল থেকে ওপর পর্যন্ত বুঝতে গেলে তাঁর ব্যক্তি জীবনটাকেও জানা দরকার। এতে করে লেখার জন্য তাঁর যে সমর্পণ, যে ত্যাগ, অজিত রায়ের অজিত রায় হয়ে ওঠা, এসবই পাঠকের বোধগম্য হয়। হেনরি মিলার একজায়গায় লিখেছিলেন, হয়েছি বটে লেখক, কিন্তু প্রায় সময়ই অন্যকে চিঠি লিখে পাঠাবার মত পয়সা থাকে না। লেখা তো নিছক কোনো বিনোদন নয়। নিজের সবকিছু উৎসর্গ করেই একজন লেখক প্রকৃত একজন লেখক হয়ে ওঠে। নইলে তাঁর জন্য খোলা থাকে শুধু বাজার যেখানে কাপড় তুলে ঢুকে পড়তে হয়। আর অজিতের পক্ষে বাজারী হওয়া সম্ভব ছিল না। ওর জিনে সেটা নেই। এবং সেজন্যই আমি আজ ওকে নিয়ে লিখতে বসেছি। ওকে হারিয়ে নিজের অন্যতম প্রিয় বন্ধু ও সহযোদ্ধা হারাবার বেদনা অনুভব করছি।
এবারে অজিতের লেখা নিয়ে কিছু কথা বলা যাক। অজিতকে নিয়ে আমি প্রথম লিখি ওর ‘যোজন ভাইরাস’ পড়বার পরে আমার পাঠপ্রতিক্রিয়া ধানবাদ থেকে প্রকাশিত ‘আমি অনন্যা’ পত্রিকার অজিত রায় বিষয়ক ক্রোরপত্রে। পরে তনুময়ের সম্পাদনায় যোজন নিয়ে যাঁরা লিখিত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন সেই ১৯৯৮ থেকে ধরে শহর বের করে ‘যোজন ভাইরাস ফ্রেগ্র্যান্সি’, সেখানে আমার লেখাটিও স্থান পেয়েছিল, আমি সেই লেখারই কিছু অংশ ঈষৎ পরিবর্তিত,এখানে তুলে ধরছি।
একটা লেখা তখনই ‘লেখা’ হয়ে ওঠে যখন তা পাঠকের মগজস্থিত আবাল্য-নিয়মতান্ত্রিক দেখাভ্যাস ও পাঠাভ্যাসের মধ্যে তুমুল চুরমার ঘটিয়ে সদর্থক নৈরাজ্যের জন্ম দেয়, এলোমেলো করে দেয় পাঠকের সযত্নে লালিত মানস জগতকে, পাঠককে মুখোমুখি দাঁড় করায় একেবারে নগ্ন করে, ‘সংবিত্তি ফিরলে কমল প্রথম যে প্রাণীটির অস্তিত্বের কথা জানতে পারে, তার নাম কমল’ (কমলে’র জায়গায় আমি ‘পাঠক’ শব্দটিকে যদি এক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত বসাই তাহলেও সম্ভবত একই ব্যাপার ঘটবে,কারণ পড়তে পড়তে পাঠকই তো যোজন ভাইরাসের নায়ক কমল হয়ে ওঠে, নিজেকেই খুঁজে দেখে সে।)
২০১৭-র কলকাতা বইমেলায় আমার প্রাপ্তিগুলোর অন্যতম অজিত রায়ের ‘যোজন ভাইরাস’-এর ঐ আশ্চর্য গদ্যশৈলী, শব্দের পর শব্দের পর কত যে নতুন ও রকমারি শব্দ, বাংলা সাহিত্যের তাবৎ পরম্পরাকে চুরমার করে দিয়ে কী আশ্চর্য এই নির্মাণ, অথচ রিডেবিলিটির চূড়ান্ত, কতটা ইমাজিনেটিভ হলে এসব সম্ভব এবং শ্রম, মেধা ও মনন, এবং গল্প বলবার স্টাইলটাও যেখানে বিষয়ের বাইরে আরও একটা বিষয় হয়ে ওঠে জাঁ লুক গদারের সিনেমার মত, তাবৎ মধ্যবিত্ত প্রতিষ্ঠান-পোষ্য সাহিত্য মাস্তানদের প্যান্টের কাছা ও ধুতির চেন একটানে খুলে দেবার এই মুন্সিয়ানা ও সিদ্ধি,সবই আমার জানার বাইরে থেকে যেত।… অজিতের জাতটিকেও আমাকে চিনিয়ে দিল যো-ভা।
যৌনতা নিয়ে মধ্যবিত্ত তেঢ্যামনা বাঙালির যে একটা ঢাউস ভিক্টোরীয় নেকুপুষুসুন্টুনিমুন্টুনি আছে, এখনো যৌনতাকে ডিসকোর্সে নিয়ে এসে গল্প বা উপন্যাস বিদেশে তো আকছার বটেই, এমনকী বাংলা সাহিত্যেও যে আমরা পাইনি তা নয়, তারপরেও,আজও পুত্রার্থের টঙে চড়ে মধ্যযুগীয় তঞ্চকতায় বাঙালি মধ্যবিত্ত বসে আছে কপালে চন্দন-তিলক, কিন্তু অজিত তার সমস্ত পূর্বসূরীদের হাঁটা পথে না গিয়ে নিজস্ব তরিকায় যে যো-ভাতে সেই বাঙালির নাকে একটা আস্ত ঝামা ঘষে দিতে পেরেছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
গদারের মোতাবেক, যৌনতাকে বিষয় করা অত্যন্ত দুরূহ যদি সমাজতাত্ত্বিকসুলভ নিস্পৃহতা ও দূরত্ব বজায় রেখে বিষয়টির বিশ্লেষণ না হয় যা প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলার সামিল। যোজন ভাইরাসে অজিত যৌনতাকে যতটা না বিষয় হিসেবে ব্যবহার করেছে তার চেয়ে বেশি একে ডিসকোর্সের মধ্যে এনে আসলে পৌঁছাতে চেয়েছে কোথাও যা নইলে ‘দর্শন’ আসে না। জীবনটাকেই খুঁজেছে অজিত। বাংলা সাহিত্যে যৌনতাকে বিষয় হিসেবে যাঁরা ব্যবহার করেছেন অজিতের আগে অজিতের সঙ্গে তাঁদের পার্থক্যটা তাঁদের কাউকেই খাটো না করেও এভাবে বলা যায় যে, অজিতের ট্রিটমেন্ট, ফোকাস ভঙ্গি, ভাবনার প্রবহমানতা, তদুপরি শব্দের যে এক বিরাট উল্লাস, হুল্লোড়, অজিতের স্বকৃত শব্দেরও ধুমধড়ক্কা, তারপরও যে রিডেবিলিটি এবং যে যৌন মনটাকে আমরা বয়ে নিয়ে বেড়াই কিন্তু নিজেকে ন্যাংটো করে দেখিনা কখনো, দেখার সাহস পাইনা, তারও কান্না তার হাহাকার, যৌনতার তৃপ্তি ও জটিলতা, অন্তত এদেশে অজিতের কোনো পূর্বসূরি নেই, অজিত নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করেছে, পাঠককে দাঁড় করিয়েছে এক বিরাট প্রশ্নের মুখোমুখি, নিজের আত্মজিজ্ঞাসায় দীর্ণ হতেই হয় অজিতের পাঠককে, যৌনতাকে ডিসকোর্সে এনে অজিত এ পর্যন্ত এগিয়ে যেতে পেরেছে।
যো-ভাতে যে আমাদের অন্তর্জীবনের দিকে একটা এক্সপেরিমেন্টে নিয়ে যাচ্ছে সত্যকে খুঁজে পেতে তার ইশারা অজিত শুরুতেই দিয়ে রেখেছিল কমলের বয়ানে : আমার জীবনে রিসার্চ বা এক্সপেরিমেন্টের একটা মেজর রোল আছে। কমল কথাটা বলেছে ভিন্ন প্রসঙ্গে, কিন্তু আমরা দেখি এই এক্সপেরিমেন্টও কমল করতে চাইছে রানী যখন শীতল, বাবরকে রানীর বিছানা-পার্টনার করেও। আসলে এই উপন্যাসে কমলও অজিত এবং বাবর তো অজিত-ই। অজিত দেখছে অজিতকে। শেষপর্যন্ত বাবরের যে ব্যর্থতা সেটা অজিতেরই ব্যর্থতা এবং কমলের পরাজয়,সেটাও।
অজিত যা লিখেছে, আমাদের রক্তে বহন করে আমরা সেগুলো নিজেদেরই করে ফেলেছি, এসব প্রসঙ্গ এখানে অবান্তর। একজন লেখক আজকের দিনে দাঁড়িয়ে নিজেকে নিয়ে লেখা ছাড়া কীই-বা লিখবে, কেন লিখবে? একজন লেখকের সাবজেক্ট তো লেখক নিজে। নিজের ‘স্ব’-কেই তো তিনি খুঁজবেন, খুঁজতে চাইবেন নিজের সৃষ্ট চরিত্রগুলোর মধ্য দিয়ে। নিজেকে টুকরো টুকরো করে দেখা ছাড়া, ভাঙা ছাড়া আর অন্য উপায় নেই। নিজেকে খনন করেই অজিত নারী-পুরুষের যৌন সম্পর্কের জটিলতাগুলো উদঘাটন করতে চেয়েছে এবং তার সেই আশ্চর্য অদৃষ্টপূর্ব ভাষা নির্মাণের মধ্য দিয়ে। এবং ক্রিষ্টিয়ান সলমনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে কুন্দেরা সব যুগের উপন্যাসে যেভাবে যে রহস্যকেন্দ্রিকতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার কথা বলেছেন অজিত তো আমার মনে হয়েছে যো-ভাতে সেইদিকেই আমাদের, পাঠককে টেনে নিয়ে যেতে পেরেছে। আর যো-ভা পড়তে পড়তে কতবার যে আমাকে আমার নিজের দিকেও ফিরে তাকাতে হয়েছে !
কমলের তুল্য নায়ক আমরা ইতিপূর্বে আমাদের সাহিত্যে দেখিনি, দেখিনি রানীর তুল্য নায়িকাও। কী নেই অজিতে? প্রতি পৃষ্ঠা থেকেই অজস্র বাক্য, শব্দ, শব্দবন্ধ তুলে ধরতে ইচ্ছা করে। অসম্ভব জেনেও। এছাড়াও আছে অসম্ভব হিউমার, কবিতা, দর্শন, অবচেতন থেকে উৎসারিত কথামালা, সুররিয়ালিস্ট চেতনা এবং ড.শিবাজী প্রধান যেমন বলেছেন, ‘যোজনকে আগাগোড়া শব্দ দিয়ে গড়া উপন্যাস বললে ভুল বলা হয় না। চিন্তা ও মননজাত এবং চেতনাঋদ্ধ এক-একটি শব্দ।… পড়তে পড়তে আবিষ্কারের পর আবিষ্কার করে যেতে হয় পাঠককে।’
…যোজনের প্রতিটি নুক & কর্নার, ঘাত-প্রতিঘাত, স্ট্রেইট & অবলিক বুঝে উঠতে আরও আরও কয়েকবার গ্রন্থটি পড়া দরকার।… নায়কের অ্যাম্বিশন তথা এক্সপেকটেশন, কেমন নায়িকা সে চেয়েছিল, জীবনে, আমি এর হদিশ পাইনি পঠিত বাংলা সাহিত্যে, পাইনি এই গদ্য শৈলীতে ওই এক্সপেকটেশন জানান দেবার, কমল, মানে আমাদের গল্পের নায়কটি, তাঁর পাঁজর-হারামি (অজিতীয়) ইয়ারদের বলেছে, লেখক জানাচ্ছে : ‘তার বদনখানি হবে নিমকদার। এ আর এমন কী! সবাই চায়। কমলের এক্সপেক্টেশনটা ছিল খানিক হেলে। হাল্কা গোঁফ থাকবে। নোলক পরবে। ঝিকমিক ঝিকমিক। যার ঠোঁট মনে পড়লে মাথায় চড়ে যাবে থ্যাঁতা রসুনের গন্ধ। যাকে চুমু খেলে সারাটা রাত টকে থাকবে মাড়ি। চোখে ননস্টপ ফটিক। আইরিশ গমের পালিশ, গালে। গলা হাস্কি। হাসলে দাঁতের সাদা। সবচে বড় যেটা, কাঁখতল হবে র্যাঁদামারা। আলবাৎ করোগেটেড। এরবাদে যাই হোক,কিন্তু কাঁখতলীটা মাস্ট। এমনিতে জিন্স। তবে শাড়ি পরলে শ্রোণী যেন থাকে ফেঁটে। ভাপানো বুক। বার্ন্টসিনা বোঁটা। বোম্বাই নলকিনী। মুঠো-খানেক মুজঘাস। কিংবা মধুকুপি। পাকাপোনার পেটির সদৃশ সিংহদ্বার। পাল্লা সরালে সদ্য পেড়ে আনা ভূতকেশী ফুলের পারফিউম। এসব অন্তত।’
আর রানী ? ‘… রানী যখন তার চামড়ার ঘ্রাণ আর জেল্লা সমেত কমলের সামনে এসে দাঁড়ায়, যখনই,পেঁয়াজের ছিলকার চেয়েও মসৃণ অংসকুট এবং বেশ কিছু নিচে চর্বি ঝরে যাওয়ার পরেও অবাক-হারে ওলন ও চোস্ত তার বক্ষগোলক দুটি, স্রেফ ও-দুটি, কমল তো ভেবেই অস্থির হয়ে ওঠে, এ মেয়ে স্রেফ বডিসের হুকগুলো খুলে দিলেই তার, কমলের, সারাজীবনের লেখা স্থগিত থেকে যাবার পক্ষে এন্তার। এমনই উত্তুঙ্গু, এমনই উচ্ছ্রায়ী, এমনই সুডৌল, এমনই দ্রড়িষ্ঠ সে-দুটি। এবং পুরো চিৎবুক হলেও একেবারে প্লেট হয়ে মিলিয়ে যায় না, সে-দুটো। কমল সাক্ষী।’
আমি নিশ্চিত যে বাংলা কথাসাহিত্যে অজিত হারিয়ে যাবার জন্য আসেনি। ভবিষ্যতের পাঠক ওকে খুঁজে বের করবে। ওই গদ্যভাষা এবং লিখন-শৈলী হারিয়ে যেতে পারে না।
দেবাশিস ঘোষ
May 20, 2022 |ভালো লাগল লেখাটা। অজিত রায়ের সম্পর্কে সংক্ষেপে বেশ ভালোভাবে আলোচনা করা হয়েছে।